হাওজা নিউজ এজেন্সি: জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের নিয়োগপ্রাপ্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক ইরিন খান জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, “সাংবাদিকদের হত্যা ও চুপ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আসলে গণহত্যা আড়াল করার চেষ্টা চলছে।”
জাতিসংঘের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ২৫২ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক গাজায় নিহত হয়েছেন। খান উল্লেখ করেন, এই সংঘাত সাংবাদিকদের জন্য ইতিহাসের “সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী” হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে এবং সাপ্তাহিকভাবে নতুন হত্যার খবর আসায় সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে।
তিনি তুলনামূলকভাবে বলেন,গাজায় নিহত সাংবাদিকদের সংখ্যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, যুগোস্লাভিয়া ও আফগানিস্তান যুদ্ধ মিলিয়ে নিহতদের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি যোগ করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে (২০২২ সালের শুরু থেকে) নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা মাত্র ১৪ জন। আফগানিস্তানের দুই দশকের দীর্ঘ যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ছিল “কয়েক ডজন”।
খান ব্যাখ্যা করে বলেন, গাজায় অনেক সাংবাদিক সরাসরি টার্গেট হয়েছেন। “এই সাংবাদিকদের বেছে বেছে হত্যা করা হচ্ছে, কারণ তাদের কাজ হলো ময়দানের ভয়াবহতা, অপরাধ ও গণহত্যাকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা।”
তিনি ইসরায়েলের মিথ্যা প্রচারণা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ইসরায়েল বহু নিহত সাংবাদিককে “সন্ত্রাসীদের সমর্থক” বা “সন্ত্রাসী” আখ্যা দিয়েছে, যাতে তাদের মর্যাদা ও কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করা যায়।
খান বলেন, “এখানে শুধু সাংবাদিকদের হত্যা নয়; বরং আসল খবরকেই হত্যা করার চেষ্টা চলছে।”
এছাড়া তিনি গাজায় আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার না দেওয়ার বিষয়টিও সমালোচনা করেন, “আমি কোনো জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রকে এরকমভাবে স্বাধীন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে বাধা দিতে দেখিনি। এটি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য ভয়াবহ নজির।”
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইরিন খান বলেন, “রাষ্ট্রগুলোকে অবশ্যই ইসরায়েলকে থামাতে হবে, নতুবা গাজার সাংবাদিকদের কণ্ঠ পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যাবে।”
সূত্র: ফ্রান্স২৪
আপনার কমেন্ট